বাপ্পী শেখ সোনারগাঁ নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
সোনারগাঁ, নারায়ণগঞ্জ — এক সময় ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারক সেই নদীগুলো আজ নিঃশ্বাস নিচ্ছে বিষে। চৈতি গার্মেন্টসের নির্লজ্জ ও অপরিশোধিত বর্জ্য ফেলার কারণে সোনারগাঁয়ের নদীগুলো পরিণত হয়েছে কালো মৃত্যুকূপে। এক সময়ের সজীব পানির ধারা এখন শুধু ঘন কালো তরল— যেখানে মাছ নেই, জীবন নেই, কেবল মৃত্যু ভাসে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের নীতিমালা উপেক্ষা করে বছরের পর বছর চৈতি গার্মেন্টস তাদের রাসায়নিক বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলছে। নদীর পানি আজ অচল, প্রবাহ থেমে গেছে, দুর্গন্ধে চারপাশ অসহ্য। মানুষ পানির ধারে দাঁড়াতে পারে না, বাচ্চারা খেলা তো দূরের কথা, নিশ্বাস নিতে গেলেও লাগে ভয়।
ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা বলেন- “আমাদের জমি মরছে, মাছ মরে ভেসে উঠছে, বাতাসে বিষ— অথচ চৈতি গার্মেন্টসের মালিকরা দিব্যি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসন যেন অন্ধ, বধির!”
পরিবেশবিদদের মতে, এটি কেবল একটি শিল্পকারখানার অপরাধ নয়— এটি একটি জাতির ইতিহাস ও সংস্কৃতির ওপর সরাসরি আঘাত।
সোনারগাঁয়ের নদীগুলো শুধু পানি নয়, এগুলো ছিল বাংলাদেশের নদী সংস্কৃতির জীবন্ত ইতিহাস। আর সেই ইতিহাস আজ চৈতি গার্মেন্টসের রক্তচোষা বর্জ্যে হত্যা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের স্পষ্ট মতঃ “চৈতি গার্মেন্টসের বিরুদ্ধে অবিলম্বে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদের বর্জ্য পরিশোধনাগার (ETP) থাকলেও সেটির ব্যবহার হয় না বা তা অকার্যকর করে রাখা হয়েছে— এটি সম্পূর্ণ অপরাধ।”
সোনারগাঁয়ের নদীগুলো আজ মৃত্যুপথযাত্রী। সময় ফুরিয়ে আসছে। যদি এখনই ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে ইতিহাসের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে এই নদীগুলো, হারাবে সোনারগাঁয়ের প্রাণ।
চৈতি গার্মেন্টসের নীরবতা, প্রশাসনের উদাসীনতা— আর এই দুইয়ের যোগফলেই বাংলাদেশ হারাচ্ছে তার এক গৌরবময় জলজ ইতিহাস।
👉 “যেখানে একসময় নদী বইত, আজ সেখানে বইছে বিষ। আর চৈতি গার্মেন্টস তারই সাক্ষ্য।”
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন