কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনার অভাবে নাকাল মণিরামপুর পৌরবাসী - daily shadhinceta

এখানে আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিন

সংবাদ শিরোনাম

Home Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

রবিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৫

কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনার অভাবে নাকাল মণিরামপুর পৌরবাসী

 


 ইমাদুল ইসলাম, যশোর জেলা ( প্রতিনিধি )



 পৌরসভার প্রাচীরের উত্তর পাশ দিয়ে বাইপাস রাস্তার দু’পাশে একই সঙ্গে চলছে ড্রেন নির্মাণ ও সাপ্লাই পানি সরবরাহের লাইনের সংস্কার কাজ। উন্নয়ন প্রকল্পের এই যুগপৎ কাজের কারণে কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনার অভাবের অভিযোগ তুলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন পৌরবাসী। বিশেষ করে পথচারী, ব্যবসায়ী ও দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী-শিক্ষক-অভিভাবক যাতায়াতে বড় ধরনের সমস্যায় পড়েছেন। গত বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) থেকে এ ভোগান্তি শুরু হয়েছে।

পৌরসভার প্রাচীর ঘেঁষে আলিয়া মাদ্রাসার সামনে পর্যন্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কাজ করছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন মুরগীহাট, পাবলিক লাইব্রেরী, প্রভাতী বিদ্যাপিঠ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিভিন্ন কম্পানির ডিলারশীপ সহ অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে দিয়ে সাপ্লাই পানি সরবরাহের পাইপ লাইন সংস্কারের জন্য খোঁড়া হয়েছে।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) থেকে পৌরসভার প্রাচীরের মেইন সড়ক বরাবর এবং কাজের শেষ অংশে আলিয়া মাদ্রাসার সামনে সড়কের মাঝ বরাবর পাথরের স্তূপ রেখে সড়কটিতে হাঁটাচলার পথও বন্ধ করে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।

তথ্য সংগ্রহে ড্রেনের কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দাবি, দ্রুতই কাজ শেষ করা হবে। তবে সংশ্লিষ্ট পৌর কর্তৃপক্ষ ভোগান্তির বিষয়টি সম্পূর্ণ এড়িয়ে গেছেন।

পথচারী ও ব্যবসায়ীদের দুর্ভোগ:

পথচারীদের পাশাপাশি ব্যবসায়ী, ২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয়রা সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন যাতায়াতে। বেচাকেনায় মন্দা ও সড়কে লোক চলাচল করতে না পারায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হাহাকার দেখা গেছে সরেজমিনে।

এদিকে শুক্রবার (১০ অক্টোবর) দুপুরের ভারী বর্ষণে দু'পার্শ্বের ফেলে রাখা ড্রেনে পানি জমে তৈরি হয়েছে হ-য-ব-র-ল অবস্থা। পায়ে হেঁটে বাড়ি যাওয়ার পথে এক বৃদ্ধ পা পিছলে নির্মাণাধীন ড্রেনে পড়ে গিয়ে কোমরে চোট পেয়ে বর্তমানে চিকিৎসাধীন।

স্থানীয় পলাশ (ছদ্মনাম) পরিচয় গোপন রাখার শর্তে জানান, "আসপাশে শতাধিক পরিবারের বসবাস। কোমলমতি শিশুরা বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না। আমারও ২টি ছেলেমেয়ে আছে, তাদের মা'কে বলেছি কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ঘরে আটকে রাখতে।"

বড় ব্যবসায়ী তাজাম্মুল বোরখা ঘরের স্বত্বাধিকারী মোঃ তাজাম্মুল হোসেন বলেন, "সাময়িক সমস্যা তো হচ্ছে, বেচাকেনা দূরের কথা, আমার দোকানের কর্মচারীরাও আসতে পারছেন না প্রতিষ্ঠানে। যে কাজ চলছে, সবই তো আমাদের মানোন্নয়নের জন্য। মেনে নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই।"

কর্তৃপক্ষের ভুল পরিকল্পনার অভিযোগ:

জনভোগান্তীর বিষয়টি নিয়ে সচেতন মহলেও চলছে নানান সমালোচনা। বেশিরভাগ সচেতন মহলের অভিযোগ, একই সাথে দুই পাশে কাজ না করে যদি একপাশের কাজ চলমান রেখে আরেক পাশ দিয়ে চলাচলের উপযোগী রাখা যেত, তবে কোনো ধরনের সমস্যা হতো না। তাদের মতে, এ ভোগান্তি নিছক কর্তৃপক্ষের ভুল পরিকল্পনার জন্যই সৃষ্টি হয়েছে। সঠিক পরিকল্পনার অভাবে পৌরবাসীর উন্নয়নের এ কার্যক্রমে সেবাগ্রহীতাদের কাছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী, পথচারী, প্রভাতী বিদ্যাপিঠের শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবক ও স্থানীয়রা যাতায়তে ক্ষোভ প্রকাশের পাশাপাশি বলছেন যে সঠিক পরিকল্পনা করে কাজ করলে হয়তো এ দুর্ভোগ হতো না।

এ প্রতিবেদকের মাধ্যমে স্থানীয়রা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছে দ্রুততম সময়ে কাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছেন।

কর্তৃপক্ষের বক্তব্য:

পৌরবাসীর এ ভোগান্তীর কথা জানিয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মোঃ আসাদুজ্জামান রয়েলের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, "সাময়িক এ সমস্যার জন্য আমরা কর্তৃপক্ষ ভুক্তভোগীদের কাছে ক্ষমা প্রার্থী। তবে অতিদ্রুত সময়ে এ কাজ শেষ হবে।"

এ ব্যাপারে মন্তব্য নিতে অসংখ্যবার মণিরামপুর পৌরসভার প্রকৌশলী (এক্সএন) উত্তম মজুমদারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোনকলের সাড়া দেননি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here